Web3 — বেসিক ধারণা এবং সম্ভাবনা

Web3 — বেসিক ধারণা এবং সম্ভাবনা

বর্তমান সময়ের একটি জনপ্রিয় টপিক — web3. অনেকেই এটাকে পরবর্তী evolution হিসেবে বিবেচনা করছেন। পুরো ইন্টারনেট ব্যবস্থা এবং সামাজিক ব্যবস্থাকে বদলে দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু এই web3 কি, কিভাবেই বা এর ব্যবহার হবে, তা নিয়েই আজকের লেখা।
লেখায় যা যা থাকছে:
**- ওয়েব কেমন ছিল

  • web3 কি এবং কেমন হবে
  • আমাদের জন্য নতুন সম্ভাবনা**

ওয়েব কেমন ছিল

একদম শুরুর দিকের ওয়েবকে web1 বলা হয়। তখনকার ওয়েব গুলো ছিল একদমই বেসিক ওয়েবপেজ এর। static — শুধুই তথ্য দেখা যেত তবে এখনকার মতো এত সুন্দর ডিজাইন বা লাইভে তথ্য আদান প্রদানের কোন সুযোগ ছিল না।

এরপর আসলো web2. এইযে আপনি লেখাটি পড়ছেন ওয়েবসাইটে, এটি web2 ভার্সনের। web3 নিয়ে আলোচনার আগে আমরা আমাদের এই পরিচিত ওয়েবের আর্কিটেকচার / কাজের পদ্ধতি সম্পর্কে একটু জেনে নেব। এতে করে নতুন ভার্সনের সাথে তুলনা করে বুঝতে সুবিধা হবে।

Web2 architecture

এই আর্কিটেকচারে আমরা মূলত, সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান (মনে করুন ফেসবুক) এর সার্ভার এক্সেস করছি আমাদের কম্পিউটার ব্রাউজার দিয়ে। সকল তথ্য জমা করা হচ্ছে তাদের সার্ভারে। HTML, CSS বা এই জাতীয় কোড করে, ডিজাইন করা হয় যাতে সার্ভারে থাকা তথ্য গুলো প্রয়োজনমত এবং সহজে খুঁজে নিতে পারি আমরা। আমাদের request এর ভিত্তিতে সার্ভারে থাকা প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ (জাভা, পাইথন ইত্যাদি) ডাটাবেজ থেকে তথ্য এনে দেয়। আমরা ব্রাউজারে সেটাই দেখি।
এখানে মূল ক্ষমতা সব ওই সার্ভার নিয়ন্ত্রণকারীদের। ওয়েবের এডমিন যতটুকু চাইবেন আর যেভাবে দেখাতে চাইবেন — ওটুকুই আমরা দেখতে পারবো। তার বেশি কিছু করার ক্ষমতা আমাদের নেই।

web3 কি এবং কেমন হবে

Web3 এর মূল লক্ষ্যই হলো — কেন্দ্রবিমুখ করে ওয়েব গড়ে তোলা বা এইযে সার্ভারে একজনের কর্তৃত, এটাকে পরিবর্তন করে নিজের কাছে সব রাখা। একটি উদাহরণ দিয়ে বলি — বিকাশ সার্ভিসটি ব্র্যাক ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ করে। বিটকয়েন/ইথেরামও বিকাশের মতো টাকা পাঠানোর একটি system তবে এটা কোন নির্দিষ্ট ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ করে না। ব্যবহারকারীদের নিয়ন্ত্রণ সব। এইযে cryptocurrency, এটা Web3 এর একটি ব্যবহারিক প্রয়োগ। Decentralized finance (DeFi), Non-fungible tokens (NFTs) এগুলোও Web3 ধারণার এক একটি প্রয়োগ।

Image source: https://tinyurl.com/2p8ujaee

  • Web3 এর গুরত্বপূর্ন বৈশিষ্ট্যই হলো — এটা আমাদেরকে central কোন নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্তি দেবে। ব্লকচেইন ধারণা ব্যবহার করে এই বৈশিষ্ট্য প্রয়োগ করা সম্ভব।
  • Web2 এবং Web3 উভয়ের একটি মিল রয়েছে সেটা হলো — UI. অর্থাৎ HTML-CSS এর এইযে সুন্দর ইন্টারফেস আমরা দেখি এটা ২ এবং ৩ উভয় ধারনাতেই থাকবে। ওয়েব এপে আমরা ডিজাইন দেখতে পারবো।

Web3 environment এ যা যা থাকবে:

  • ব্লকচেইন: একটি ওপেন আর নির্দিষ্ট কেন্দ্র বিহীন (decentralized) নেটওয়ার্ক। যে কেউ লেজারে অ্যাক্সেস করতে পারবে এবং লিখতে পারবে কারণ কোনো একক ব্যক্তি এই নেটওয়ার্কের মালিক থাকবে না।
  • স্মার্ট কন্ট্রাক্ট: এগুলি এমন কোড যা decentralized virtual machine (DVM) এ রান করবে এবং ব্লকচেইনে কোন পরিবর্তন আসলে লজিক কোড হিসেবে কাজ করবে।
  • Decentralized virtual machine (DVM): স্মার্ট কন্ট্রাক্টে লেখা লজিক কোডগুলো রান করাই হবে এর কাজ
  • Decentralized application (DApp): এটি ওয়েবের UI লজিক নিয়ন্ত্রণ করবে। DApp এর সাহায্যে মানুষ স্মার্ট কন্ট্রাক্টে লেখা লজিক নিয়ে কাজ করতে পারবে।

নিচে Web3 আর্কিটেকচারের ছবি দিলাম। এটা বুঝতে সহায়ক হবে:

Image credit: Preethi Kasireddy

আমাদের জন্য নতুন সম্ভাবনা

  • Artificial intelligence (AI) ব্যবহার করে ইউজারের জন্য সেরা তথ্য গুলো ফিল্টার করে আনা সম্ভব হবে। এতে করে ওয়েবের ব্যবহারযোগ্যতা আরো বেড়ে যাবে
  • ইন্টারনেটের 2D এপ্লিকেশনকে আরও প্রাণবন্ত 3D এপ্লিকেশনে পরিবর্তন করা সম্ভব হবে এই নতুন ওয়েবের মাধ্যমে। এখন আমরা শুধু ইন্টারনেট ব্যবহার করি। আর এই Web3 আসলে আমরা ইন্টারনেটের ভিতরেই প্রবেশ করে ফেলতে পারবো। এক নতুন জগৎ!

যত সংক্ষেপে সম্ভব ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছি। লেখাটি সম্পন্ন করতে দেশি বিদেশী বিভিন্ন লেখকের সহায়তা নিতে হয়েছে। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। লেখাটি ভাল লেগে থাকলে অন্যদের সাথে শেয়ার করুন ❤